শুক্রবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০

 বাংলা ভাষার আন্তর্জাতিকীকরণ



ভাষা মানুষে-মানুষে যোগাযোগের প্রধানতম বাহন। ভাষার কতটুকু মানুষের কোন জন্মগত বৈশিষ্ট্য আর কতটুকু পরিবেশনির্ভর সে ব্যাপারে আধুনিক ভাষাবিজ্ঞানীদের মতভেদ আছে। তবে সবাই একমত যে স্বাভাবিক মানুষমাত্রেই ভাষা অর্জনের মানসিক ক্ষমতা নিয়ে জন্মায়, এবং একবার ভাষার মূলসূত্রগুলি আয়ত্ত করে ফেলার পর বাকী জীবন ধরে মানুষ তার ভাষায় অসংখ্য নতুন নতুন বাক্য সৃষ্টি করতে পারে। এরকম অসীম প্রকাশ ক্ষমতাস¤পন্ন ভাষা একান্তই একটি মানবিক বৈশিষ্ট্য; মানুষ ছাড়া আর কোন প্রাণী এই ক্ষমতার অধিকারী নয়। প্রতিটি মানুষ ভাষা আয়ত্ত করার সহজাত বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্ম নেয় এবং ঐ মানুষটি যে নির্দিষ্ট ঐতিহাসিক পর্যায়ের নির্দিষ্ট ভৌগোলিক পরিবেশ-বেষ্টিত ভাষিক সমাজের অন্তর্গত, সেই সমাজে সে দৈনন্দিন ভাষাপ্রয়োগের মাধ্যমে তার নিজস্ব ভাষাজ্ঞান বিকশিত করে।

পৃথিবীতে বাঙালিই একমাত্র জাতি, যারা মাতৃভাষার জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে, মাতৃভাষা বাংলার জন্য শত শত প্রহসন-নির্যাতন সহ্য করেছে, রাজপথে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছে এবং ভাষার অধিকার ছিনিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। মাতৃভাষা রক্ষার আন্দোলন পরবর্তীকালে চ‚ড়ান্ত স্বাধীনতা অর্জনের পথকে ত্বরান্বিত করেছে। স্বাধীন দেশে স্বাধীনভাবে বাংলা ভাষায় কথা বলার সব প্রতিবন্ধকতা একাত্তর-পরবর্তী সময় থেকেই দূর হয়েছে। বাঙালিরা পেয়েছে অবাধে বাংলা বলার স্বাধীনতা, লেখার স্বাধীনতা। দাপ্তরিক কাজে বাংলা ভাষার ব্যবহার শুরু হয়েছে। বাংলা ভাষা পেয়েছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিবছর পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বাংলা ভাষার মর্যাদা এখন কোনো অংশেই কম নয়। কয়েকটি দেশে দ্বিতীয় ভাষা হিসেবেও বাংলা ব্যবহার করা হচ্ছে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রæয়ারি বাংলা ভাষার রাষ্ট্রীয় মর্যাদার দাবিতে যে আন্দোলন হয়, তার স্মরণে ১৯৯৯ সালের ২১ ফেব্রæয়ারি থেকে সারা বিশ্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন শুরু হয়। এই আন্তর্জাতিক দিবসের পেছনের গল্পে আছে কানাডা প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম এবং আবদুস সালামসহ কানাডার বহুভাষিক ও বহুজাতিক সংগঠন ‘মাতৃভাষা প্রেমিকগোষ্ঠী’ উদ্যোগ। এরই ধারাবাহিকতায় এসেছে ইউনেস্কোর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি, যা বাংলা ভাষার দ্বিতীয়বার বিশ্বজয়। বাংলা ভাষার এমন আন্তর্জাতিকীকরণ সত্যই প্রশংসনীয়। বাংলা ভাষার বিশ্বজনীন ব্যবহার আমাদের জন্য একটি গৌরবের বিষয়। ভাষা মানুষের চিন্তাশীলতার মাধ্যমে বিকশিত হয়ে বিশ্বজনীন হয়ে ওঠে। বিভিন্নভাবে এ চিন্তাশীলতার বিস্তার ঘটে।

‘বাংলা ভাষা-পরিচয়’ গ্রন্থে রবীন্দ্রনাথ ভাষার কাঠামোকে পাকাবাড়ির সঙ্গে তুলনা করেছেন। রবীন্দ্রনাথের ভাষায়: “পাকাবাড়ির প্রধান মসলা ইট, তার পরে চুন-সুরকির নানা বাঁধন। ধ্বনি দিয়ে আঁটবাঁধা শব্দই ভাষার ইট, বাংলায় তাকে বলি ‘কথা’। নানারকম শব্দ চিহ্নের গ্রন্থি দিয়ে এ কথাগুলোকে গেঁথে গেঁথে হয় ভাষা।” এমনই একটি সমৃদ্ধ ভাষা বাংলা। এ ভাষাকে মননে ও চেতনায় লালন করে রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, ‘বাংলা ভাষাকে তাহার সব ধরনের মূর্তিতেই আমি হৃদয়ের সহিত শ্রদ্ধা করি, এ জন্য তাহার সহিত তন্ন তন্ন করিয়া পরিচয় সাধনে আমি ক্লান্তিবোধ করি না।’ বাংলা ভাষা এখন বাংলাদেশ ও বাঙালির পরিমÐল ছাড়িয়ে চারটি মহাদেশের ত্রিশটি রাষ্ট্রের শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার বিষয়বস্তুতে পরিণত হয়েছে। আবার সারা বিশ্বে বাংলা ভাষায় রচিত ভিন্ন ভিন্ন ধারার সাহিত্য নিয়ে গবেষণা চলছে। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের গবেষণা ও চর্চা যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, চীন, জাপান, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, জার্মানি, পোল্যান্ড, রাশিয়া, সুইডেন, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, চেক রিপাবলিক, কানাডা, রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলোর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রবল আগ্রহ সৃষ্টি করেছে। সবচেয়ে আশাবাদী হওয়ার মতো বিষয় হচ্ছে, চীনা ভাষায় রবীন্দ্ররচনাবলির ৩৩ খÐের অনুবাদ থেকে শুরু করে লালনের গান ও দর্শন ইংরেজি ও জাপানি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। সোভিয়েত আমলে রুশ ভাষায় রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যকর্মের ব্যাপক অংশের অনুবাদ হয়েছে। সা¤প্রতিক এ ধারা অব্যাহত থাকায় গবেষকরা মনে করছেন- ইংরেজি, চীনা ও জাপানি ভাষার পর বাংলা ভাষা নিয়ে বিশ্বের আগ্রহ যেমন বাড়ছে, তেমনি এ ভাষার প্রসার ও চর্চা বেড়ে চলেছে।


১৮৬১ সালে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে দুটি ঘটনা ঘটে। সে বছরই মাইকেল মধুসূদন দত্ত লিখলেন মেঘনাদবধ কাব্য এবং জন্ম নিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ১৯১৩ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেল পেলেন। সেই প্রথম বাংলা ভাষার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। ১৯১৩ থেকে আজ ২০২০। পেরিয়েছে এক শ বছরের বেশি সময়। এই সময় পরিধিতে বাংলা ভাষার অবস্থান বিশ্বে কোথায়? পৃথিবীর প্রধানতম একটি ভাষা হয়ে অন্তর্জালের এই জগতে কীভাবে ছড়িয়ে আছে বাংলা? ভাষার গুরুত্বপূর্ণ ওয়েবসাইট এথনোলগের ২০২০ সালের ২২তম সংস্করণের পরিসংখ্যান বলছে, পৃথিবীজুড়ে মোট বাংলাভাষীদের সংখ্যা প্রায় ২৬ কোটি ৫০ লাখের (ভাষা গবেষকদের মতে এ সংখ্যা ২৮ কোটি হবে) কিছু বেশি। অবস্থান বিচারে এর স্থান সারা বিশ্বের ভাষাগুলোর মধ্যে পঞ্চম। পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩ শতাংশ মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলে।

দীর্ঘদিন ধরে চীনের রেডিও বেইজিং থেকে বাংলায় স¤প্রচার চলে আসছে। চীন থেকে প্রকাশিত হয়েছে বেশ কিছু বাংলা অনুবাদকর্ম। গত কয়েক বছর ধরে সেখানে ব্যাপকভাবে বাংলা ভাষা নিয়ে কাজ চলছে। বিশেষ করে রবীন্দ্রনাথ নিয়ে বাংলা থেকে চীনা ভাষায় অনুবাদের কাজ করছেন প্রায় ৩০ জন সিআরআইয়ের (চায়না রেডিও ইন্টারন্যাশনাল) সাবেক কর্মী। এ ছাড়া চায়না ব্রডকাস্টিং বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান চাংসিং বেশ কিছু চীনা ভাষাবিদ-গবেষককে বাংলা-চীনা-বাংলা অনুবাদ এবং বাংলা ভাষাবিষয়ক গবেষণা প্রকল্পে সংযুক্ত করতে সক্ষম হয়েছে।

বাংলা ভাষায় শিক্ষা-গবেষণা এখন বিশ্বময়। একসময় শুধু যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষায় গবেষণাকর্ম পরিচালিত হতো। বাংলাদেশের স্বাধীনতার আগ থেকেই লন্ডনের সোয়াসে প্রাচ্যবিদ্যা ও ভাষাচর্চা বিভাগে চলছে বাংলা ভাষার চর্চা ও গবেষণা। যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় এবং এশীয় গবেষণাকেন্দ্রে বাংলা ভাষার চর্চা হচ্ছে, যার মধ্যে নিউইয়র্ক, ইথাকা, শিকাগো, মিনেসোটা, ফ্লোরিডা, মেরিল্যান্ড, ক্যালিফোর্নিয়া ভার্জিনিয়ার নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। জাপান, চীন, কোরিয়া, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় বাংলা ভাষা নিয়ে গবেষণা ও চর্চা হচ্ছে। তবে এ ক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে অগ্রণী জাপান ও চীন। জাপানে প্রায় ৭০ বছর আগে কাজুয়ো আজুমা রবীন্দ্রপ্রেম থেকে বাংলা ভাষার চর্চা শুরু করেছিলেন। কেই শিরাই, অধ্যাপক নারা (প্রয়াত), কিওকো নিওয়া, কাজুহিরো ওয়াতানাবে, তোগাওয়া মাসিকো প্রমুখ জাপান ফাউন্ডেশন এবং টোকিও, ওসাকা প্রভৃতি বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা ও শিক্ষকতা করেছেন। আট বছর আগে টোকিও ইউনিভার্সিটি অব ফরেন স্টাডিজে বাংলা ভাষা শেখানো শুরু হয়। বর্তমানে এই বিভাগে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৩০ জন। ওসাকা ও কিয়োতো বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে বাংলা ভাষা শিক্ষা দিচ্ছেন বাংলা ভাষার তরুণ গবেষক হুজিয়ারা। এ ছাড়া গিফু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিদিকি মাকি বাংলা ও জাপানি ভাষার বাক্য গঠন নিয়ে তুলনামূলক গবেষণা করছেন।

ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, বেলজিয়াম, পোল্যান্ড ও চেক প্রজাতন্ত্রে বাংলা ভাষার চর্চা ও গবেষণা চলছে। ফ্রান্সে বাংলা থেকে ফরাসি অনুবাদকদের মধ্যে রয়েছেন ফ্রাঁস ভট্টাচার্য, পৃথ্বীন্দ্র মুখোপাধ্যায় ও প্রবাল দত্তগুপ্ত। পৃথ্বীন্দ্র মুখোপাধ্যায় অনুবাদ করেছেন বাউলগান ও তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস। ফ্রাঁস ভট্টাচার্য অনুবাদ করেছেন বিভ‚তিভ‚ষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস পথের পাঁচালী, জীবনানন্দ দাশের কবিতা এবং স¤প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনী।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই বাংলাদেশি অনলাইন বাংলা পত্রিকার অনুমোদন মিলেছে। ফলে বাংলা পত্রিকা এখন কেবল বাংলাদেশ বা ভারতের ছাপাখানা থেকেই নয়, বরং পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে থেকেই প্রকাশিত হচ্ছে। বাংলা ভাষার প্রতি আগ্রহের কারণে বিশ্বেও প্রায় ১০টি দেশের রাষ্ট্রীয় বেতারে বাংলা ভাষার আলাদা চ্যানেল রয়েছে। আরও ১০টি দেশের রেডিওতে বাংলা ভাষায় আলাদা অনুষ্ঠান স¤প্রচার করা হচ্ছে। যুক্তরাজ্যে ৬টি ও যুক্তরাষ্ট্রে ১১টি বাংলাদেশি মালিকানাধীন ও বাংলা ভাষার টেলিভিশন চ্যানেল রয়েছে। রয়েছে কানাডাতেও। বাংলা ভাষায় যুক্তরাজ্য থেকে মোট ১২টি সাপ্তাহিক পত্রিকা বের হয়। বেতার বাংলা নামে সেখানে একটি বাংলা রেডিও স্টেশন রয়েছে। ধূমকেতু, জন্মভ‚মি, প্রতিদিন, স্বদেশ-বিদেশ নামে পাক্ষিক ও মাসিক পত্রিকাও প্রকাশিত হচ্ছে। ইউরোপের ইতালিতে বর্তমানে পাঁচটি বাংলা দৈনিক পত্রিকা এবং রোম ও ভেনিস শহর থেকে তিনটি বাংলা রেডিও স্টেশন পরিচালিত হচ্ছে।


বাংলা ভাষাকে জাতিসংঘের অন্যতম দাফতরিক ভাষা করার জন্যও প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। প্রস্তাবটি বাস্তবায়নের জন্য ক‚টনীতিকরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে বহির্বিশ্বে ৩০টি দেশের ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হয় বাংলা। বিশ্বের ছয়টি দেশের রাষ্ট্রীয় বেতারে বাংলা ভাষার আলাদা চ্যানেল রয়েছে। কমপক্ষে ১০টি দেশের রেডিওতে বাংলা ভাষার আলাদা অনুষ্ঠান স¤প্রচার করা হচ্ছে। ব্রিটেনে ছয়টি ও আমেরিকায় ১০টি বাংলাদেশি মালিকানাধীন বাংলা ভাষার টেলিভিশন চ্যানেল রয়েছে। ব্রিটেনে ১২টি বাংলা সাপ্তাহিক পত্রিকা বের হয়। ‘বেতার বাংলা’ নামে সেখানে একটি বাংলা রেডিও স্টেশন রয়েছে। এ মুহূর্তে বিশ্বে প্রায় ৩২ কোটি মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলে। ২০৫০ সাল নাগাদ কেবল ১৪ থেকে ২৫ বছর বয়সী বাংলা ভাষীর সংখ্যা ৩৩ কোটি ৬০ লাখ ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বর্তমানে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ সিয়েরালিওনের অন্যতম সরকারি ভাষা বাংলা। ২০০২ সালের ১২ ডিসেম্বর দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আহমাদ তেজান কাব্বাহ বাংলাকে সিয়েরালিওনের অন্যতম সরকারি ভাষা হিসেবে ঘোষণা করেন। ২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার সংসদ বাংলাকে স্বীকৃতির বিল পাস করে। ভারতীয় সংবিধানের অষ্টম তফসিলে তালিকাভুক্ত ১৮টি ভাষার মধ্যে বাংলা অন্যতম। যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ ও ইমিগ্রেশন ওয়েবসাইটে বাংলা ভাষা ব্যবহার করা হচ্ছে।

প্রযুক্তির প্রবল প্রবাহের এই অনুক‚ল সময়ে বাংলা ভাষাকে ইউনিভার্সাল নেটওয়ার্কিং ল্যাক্সগুয়েজ [ইউএনএল]-এর আওতায় আনার ব্যাপারে গ্রহণ করতে হবে প্রয়োজনীয় কার্যাদি। পৃথিবীর অন্য ভাষাভাষীর কাছে বাংলাভাষাকে প্রযুক্তির মাধ্যমে এই ভাষান্তরের [স্বয়ংক্রিয়ভাবে এক ভাষা থেকে অন্য ভাষায় রূপান্তর] মহাকেন্দ্রে পৌঁছে দিতে পারলে বাঙালির ইতিহাস-ঐতিহ্য, শিল্প-সাহিত্যসহ সামাজিক-সাংস্কৃতিক যাবতীয় ভাবস¤পদ সম্বন্ধে অগণন মানুষ অবগত হতে পারবে; বাংলাভাষী জনগোষ্ঠীও অনুরূপভাবে জানতে পারবে অপরাপর ভাষাভাষীর কৃষ্টিসমেত দরকারি সব বিষয়াদি। আর এটি যথার্থরূপে স¤পন্ন করা গেলে বৃদ্ধি পাবে আমাদের আন্তঃভাষা যোগাযোগ। এমনটি করা গেলে ভাষার দাবী বিষয়ে আমাদের বর্তমান প্রত্যয়ের সাথে যুক্ত হবে এক বিস্ময়কর নতুন দিগন্ত। বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জাতিসংঘের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে স¤পন্ন করতে পারে এই প্রয়োজনীয় নেটওয়ার্কিং-এর কাজটি।

বাংলা ভাষার বিশুদ্ধ ও সঠিক চর্চা বাড়ানোসহ এ ভাষাকে বিশ্বমানের মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠা করতে বাংলাদেশ সরকারের এখনই কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যুগোপযোগী মানের বাংলা ভাষায় শিক্ষাদানের নীতি গ্রহণ এবং দেশের শিক্ষাবিদদের মাধ্যমে উচ্চশিক্ষার পাঠ্যবইগুলো বাংলায় অনুবাদ করা দরকার। তাহলে শিক্ষার্থীরা যে কোনো বিষয় খুব সহজে আয়ত্ত করতে পারবে। এ জন্য প্রয়োজনে জাতীয় অনুবাদ সংস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিচারব্যবস্থায় বাংলা ভাষা প্রচলন করতে হবে। ব্যাংক, উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় বাংলা ভাষা প্রচলন করতে হবে। সর্বোপরি প্রত্যেক বাংলা মায়ের সন্তানকে হৃদয় হতে বাংলা ভাষাকে ধারণ করতে হবে, চর্চা করতে হবে এবং বিশ্ববাসীর কাছে এ ভাষার সৌন্দর্য তুলে ধরতে হবে।


মোঃ শিয়াবুজ্জামান

সহকারী শিক্ষক

ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, সৈয়দপুর


বুধবার, ২২ এপ্রিল, ২০২০

বিতর্ক হোক পাঠ্যসূচির অংশ

weZK© †nvK cvV¨m~wPi Ask


weZK© gv‡b hyw³-ZK© w`‡q mZ¨‡K cÖKvk Kiv Avi wb‡R‡K hyw³ev`x gvbyl wn‡m‡e M‡o ‡Zvjv| mevB g‡b K‡i weZK© gv‡b wb‡R‡K eyS‡Z †kLv,wb‡R‡K mZ¨ I wg_¨vi gv‡S we‡f` m„wó Kiv Avi mZ¨‡K †g‡b wb‡Z cÖ‡qvR‡b civRq eiY K‡i †bqv| Avm‡j weZK© GUvB, †hLv‡b hyw³,Z_¨ Avi Z‡K©i †Ljv|
weZK© gv‡b cÖZ¨‡qi m‡½ wb‡Ri K_v ej‡Z cviv| cÖwZc‡ÿi K_v gb w`‡q †kvbv| †jLvcovi †ÿ‡ÎI GB ¸YwU `viyY Kv‡R jv‡M|
‡mB wMÖK mf¨Zvi mgq †_‡KB weZ‡K©i ïiæ| wK¬Ib,Wv‡qvWUvm,wm‡m‡ivi g‡Zv e¨w³iv †m hy‡M ivóªxq  wewfbœ Kvh©µ‡gi fv‡jv-g›` wePvi Ki‡Zb,mycvwik Ki‡Zb Rbm¤§y‡L weZK© K‡i| `yÕnvRvi eQi c‡i G‡mI,iv‡óªi bxwZwba©viK †_‡K ïiæ K‡i ¯‹zj-K‡j‡Ri wkÿv_©xiv-mevB hy³ n‡”Q weZ‡K©i mv‡_| ‡KDev mwµqfv‡e weZK© K‡i,‡KD weZK© †`‡L,Avi †KD `~‡i `vuwo‡q weZvwK©K‡`i ÔSMov‡UÕ Dcvwa w`‡q e¨½ K‡i| Z‡e ¯‹zj,K‡jR ev wek^we`¨vj‡q weZ‡K©i bvg †kv‡b wb,G iKg gvbyl †gjv fvi|

weZ‡K©i wbqg ¸‡jv Avgv‡`i mK‡jiB Rvbv| Avgiv A‡b‡KB ¯‹zj-K‡j‡R ev cvovq wKsev K¬v‡e KL‡bv bv KL‡bv weZ‡K© Ask wb‡qwQ,‡kÖvZv wn‡m‡e Dcw¯’Z †_‡KwQ| wKš‘,weZ‡K©i g‡Â bv e‡mI ïay weZ‡K©i wbqg¸‡jv wVKg‡Zv cvjb K‡i †M‡j wb‡Ri †jLvcovi †ÿ‡Î,fvebv-wPšÍvi †ÿ‡Î KZLvwb GwM‡q hvIqv m¤¢e †mUv †Zgb K‡i †f‡e †`‡LwQ Kx?
weZK© gvbyl‡K Dcjwä Ki‡Z †kLvq Zvi mxgve×Zv, wPwb‡q †`q Zvi fzj‡K, eyS‡Z †kLvq cÖwZc‡ÿi hyw³‡K| wb‡Ri gZev‡`i evB‡iI †h A_©c~Y© mZ¨ I ev¯ÍeZv _vK‡Z cv‡i  Zv gvbyl‡K eyS‡Z †kLvq weZK©| ZvB ejv n‡q _v‡K,weZK© DØy×Ki‡Yi m„Rbkxj wkí| GLb cÖkœ n‡Z cv‡i, †Kb Avgiv wkÿv_©x‡`i cvV¨m~wP ev wm‡jev‡mi ewnf‚©Z weZK© wb‡q PP©v Kivi Dci †Rvi w`w”Q ?

Áv‡bi eûgywLZv †Kej †kÖwYK‡ÿ wKsev cvV¨eB n‡Z AR©b Kiv m¤¢e bq| GB Rb¨ weZK©PP©v wkÿvi †ÿ‡Î ¸iæZ¡c~Y© f‚wgKv cvjb K‡i| weZK© Ki‡Z wM‡q GKRb wkÿv_©x eûwea welq m¤ú‡K© aviYv jvf Ki‡Z mÿg | evwY‡R¨i QvÎ n‡qI GKRb wkÿv_©x †hgb hyw³we`¨v m¤ú‡K© cÖv_wgK aviYv jvf Ki‡Z cv‡i †Zgwb GKRb weÁv‡bi wkÿv_©xI weZK© Ki‡Z wM‡q A_©bxwZ,BwZnvm,`k©b,ivRbxwZ BZ¨vw` m¤ú‡K© cÖv_wgK ch©v‡qi Ávb AR©b Ki‡Z cv‡i | Gfv‡e GKRb c~Y©v½ m„wókxj I `vwqZ¡evb †hvM¨ bvMwiK nIqvi Rb¨ eûgvwÎK Ávb Zvi wkÿv‡ÿ‡Î cwic~Y©Zv G‡b †`q| wkÿvi Ab¨Zg D‡Ïk¨ wPšÍv-‡PZbvi gva¨‡g bZzbZ¡ m„wó,wbR Ges cwicvk^© m¤ú‡K© `„wói D‡b¥l| Avi GB D‡b¥l mvwaZ n‡Z cv‡i weZ‡K© DÌvwcZ welq¸‡jvi ch©v‡jvPbv I we‡køl‡Yi gva¨‡g| AvaywbK wkÿve¨e¯’vq weZ‡K©i Abykxjb gvbwmK DrK‡l©i Rb¨ we‡kl f‚wgKv ivL‡Z mÿg| †Kbbv weZ‡K©i gva¨‡g wkÿv_©xiv †h †Kvb welq‡K GKB m‡½ ci¯úi we‡ivax wePvi Ki‡Z †k‡L| d‡j Zviv RxebcÖev‡n cÖK…Z AvZ¥wek^vmx n‡q DV‡Z cv‡i| weZK© wkÿv_©xi fvlv I mvwnZ¨‡eva‡K †hgb m¤úªmvwiZ Ki‡Z cv‡i wVK †Zgwb wPšÍv I ev‡K¨i g‡a¨ mgš^q NUv‡Z cv‡i| Gfv‡e GKRb wkÿv_©x †bZ…Z¡`v‡bi ¸Yvejx‡Z ¸Yvwš^Z n‡Z cv‡i|
hyw³ n‡”Q weZ‡K©i cÖvY| ZvB weZK© GKRb wkÿv_x©‡K hyw³ev`x  n‡Z wkÿv  †`q| weZ†K©i wbw`ó mg‡q mvwnZ¨,BwZnvm,Mí ,Z_¨ I ZË¡ hv wKQzB wb‡ew`Z †nvK bv †Kb Gi g~j D‡Ïk¨B n‡jv hyw³i  †KŠkj ev hyw³i wewbg©vY| weZK© wkÿv_x©‡K covïbvi Af¨vm MV‡b mnqZv cÖ`vb K‡i _v‡K|weZ‡K©i gva¨‡g GKw`‡K †hgb wkÿv_x©‡`i gyL¯’ we`¨vi cÖeYZv Kg‡e wVK Ab¨w`‡K m„Rbkxj wPšÍvi weKvk NU‡e|

e¨w³MZ Rxe‡b wkÿKZv I weZK© msMV‡bi mv‡_ m¤ú„³ nIqvi myev‡` weZK© PP©vi ¸iæ‡Z¡i w`KwU we‡klfv‡e  Abyaveb K‡iwQ| GKRb wkÿv_©x‡K mybvMwiK,mZ¨ev`x I hyw³ev`x gvbyl wn‡m‡e M‡o †Zvjvi †cQ‡b weZK© ¸iæZ¡c~Y© f~wgKv cvjb K‡i| Avi ¯‹zj-K‡jR n‡”Q wkÿv_©x‡`i weZK© PP©vi Ab¨Zg †ÿÎ| eZ©gv‡b ¯‹zj,K‡jR I wek^we`¨vjq ¸‡jv‡Z cÖwZwbqZ wewfbœ ai‡bi weZK© cÖwZ‡hvwMZv AbywôZ n‡”Q| cÖZ¨šÍ GjvKvi ¯‹zj †_‡K ïiæ K‡i  kn‡ii bvgx-`vgx ¯‹zj-K‡j‡R AvRKvj AbywôZ n‡”Q weZK© cÖwZ‡hvwMZv| eQ‡ii wewfbœ mg‡q miKvwi I †emiKvwi D‡`¨v‡M Gme weZK© cÖwZ‡hvwMZvq Ask ‡bq AmsL¨ QvÎ-QvÎx| GQvovI wewfbœ ¯‹zj-K‡j‡R wbR¯^ ZË¡veav‡b K¬v‡ei gva¨‡gI weZK© PP©v n‡q Avm‡Q| Z‡e Zv wbqwgZ bq| wKQzw`b c~‡e©I ¯‹zj-K‡jR¸‡jv‡Z †hfv‡e weZK© PP©v Kiv n‡Zv Zv wQj A‡bKUv wew”Qbœfv‡e| Avevi †`Lv hvq,A‡bK ¯‹zj-K‡j‡R wbqwgZ weZK© PP©v bv _vK‡jI A‡bK mgq Pv‡ci gy‡L †KvbiKg `vqmvovfv‡e  wkÿv_©x‡`i weZK© †kLvq| d‡j,weZK© PP©vi ‡h cÖK…Z D‡Ïk¨ Zv A‡bKvs‡k e¨vnZ nq|
   Avkvi K_v,eZ©gv‡b weZK© PP©v GKwU Av‡›`vj‡b iƒc wb‡q‡Q| we¯Í…Z cwim‡i,e¨vcKfv‡e PP©v n‡”Q weZ‡K©i| mgvbZv‡j meLv‡b mgv`„Z n‡”Q weZK©wkí| †`‡ki cÖwZwU Dc‡Rjv,‡Rjvq n‡”Q weZK© Drme,ˆZwi n‡”Q A‡bK ¯‹zj-K‡j‡R bZzb bZzb weZK© K¬ve| Z‡e  weZK© PP©vi ¸iæZ¡ we‡ePbv Ki‡j ¯‹zj-K‡j‡R GB weZK© PP©v h‡_ó bq| ZvB‡Zv `vex D‡V‡Q,weZK©‡K cvV¨m~wP‡Z AšÍf©~³ Kivi| GKRb wkÿv_©x‡K m„Rbkxj,‡PŠKl,eyw×`xß I ÁvbgyLx K‡i M‡o †Zvjvq Gi (weZK©) †Kvb weKí †bB| weZK©‡K cvV¨m~wP‡Z AšÍf©~³ Kiv n‡j weZK© PP©vq †hgb Avm‡e Avg~j cwieZ©b †Zgwbfv‡e QvÎÑQvÎx‡`i gv‡SI Avm‡e ‡hŠw³K cwieZ©b| weZK© PP©vi gva¨‡g mg‡qi mv‡_ Zvj wgwj‡q wkÿv_©xiv GwM‡q hvK| ‰Zix †nvK hyw³ev`x gvbemgvR| RqZz weZK©|

বিতর্কের জন্য কিছু ওয়েবসাইট

AI in Education, AI in Teaching: Revolutionizing Learning

Artificial Intelligence (AI) is changing many fields. Education and teaching are no exceptions. ...